মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে ধর্ষণের শিকার ৮ বছরের শিশুটিকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢাকা মেডিকেলে কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। এর আগে ঢামেকে পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিল শিশুটি।আজ শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে লাইফ সাপার্টে নেওয়া হয়। বর্তমানে শিশুর অবস্থা অবনতি ঘটলে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিশুর মামাতো ভাই সুজন।শিশুর মামাতো ভাই সুজন জানান, আমরা নিজেরাও হতবাক হয়ে গেছি, এতোটুকু একটা শিশুর সাথে এরকম বর্বর আচরণ হবে তা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি। আমার ছোট বোনটি এই জানুয়ারি মাসে তৃতীয় শ্রেণিতে উঠেছিল। এরই মধ্যে ওর জীবনের প্রদীপ ধ্বংস করে দিল ওই পাষন্ড । আমরা আগে যদি জানতাম বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে তাহলে কখনই তাকে বোনের বাড়িতে যেতে দিতাম না। এই বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
সুজন আরও জানান, আমাদের পরিবারের কাউকেই আমার ছোট বোনের সাথে বেশি দেখা করতে দিচ্ছে না দায়িত্বরত চিকিৎসকরা। তারা ভিতর থেকে এসে আমাদেরকে যা জানায় আমরা তাই জানতে পারএর আগে, বৃহস্পতিবার রাতের দিকে গুরুতর অবস্থায় শিশুটিকে ঢামেকে আনা হয়। পরে শিশুটিকে ঢামেকের পিআইসিইউতে নেওয়া হয়।
সে সময় শিশুর চাচা বলেন, ‘আমার ভাতিজি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করত। শনিবার নিজ বাড়ি শ্রীপুর থেকে সে মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে বড় বোনের শ্বশুর হিটু মিয়া তাকে একটি ঘরের মধ্যে নিয়ে ধর্ষণ করে। মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর গুরুতর অবস্থায় ঢামেকে আনা হয়।’
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে শিশুটির চাচা বলেন, ‘আমার ভাতিজির শারীরিক অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। মধ্যরাতে তাকে পিআইসিইউতে নেওয়া হয়। নতুন করে চিকিৎসকেরা তার কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দিয়েছেন।’
এদিকে, মাগুরার পুলিশ সুপার (এসপি) মিনা মাহমুদা বলেন, ‘এই ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুটির বোনজামাই মো. সজিব শেখ (১৮) ও তাঁর বাবা হিটু মিয়াকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক বলেন, ‘শিশুটিকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। দায়িত্বরত চিকিৎসক জানিয়েছেন শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশকে জানিয়েছি।’
এর আগে আজ দুপুরে মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় সদর থানা ঘেরাও করে একদল বিক্ষুদ্ধ জনতা। বিক্ষোভ করে সদর থানার প্রধান ফটক ভাঙতে যায় তারা। এ সময় সেনাবাহিনী চলে এলে জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
এ বিষয়ে মাগুরা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় সন্দেহভাজন দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ দেয়নি। তবে পুলিশ এ বিষয়ে তৎপর বলেই অভিযুক্তদের আটক করেছে। শিশুটির চিকিৎসা চলছে। হয়তো সেজন্য আইনগত বিষয়ে তার পরিবার বিলম্ব করছে। দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে পুলিশ কাজ করছে।ছি।
Post a Comment